শীলনবাংলা ডটকম (অনলাইন ডেস্ক) : বাংলাদেশ বাণিজ্যের বাজার তৈরিতে আগের তুলনায় অনেক অগ্রসর হয়েছে। নতুন নতুন দ্বার উন্মুক্ত হচ্ছে। আশা জাগানিয়া নতুন বাজারের প্রতি আমাদের উদ্যোগী মনোভাব দেখাতে হবে। দক্ষ জনশক্তি রপ্তানির ক্ষেত্রে মালয়েশিয়া, দুবাই বা সৌদি আরবের মতো ভুল করলে চলবে না। আরও দায়িত্বশীল এবং সুযোগকে কাজে লাগাতে হবে।
আশার কথা হলো, স্বাধীনতা-উত্তর কাল থেকেই অবিভক্ত সোভিয়েত ইউনিয়নের সঙ্গে বাংলাদেশের যে সুসম্পর্ক তৈরি হয়েছিল, সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙে যাওয়ার পর রাশিয়ার সঙ্গে তা অব্যাহত আছে। দ্বিপক্ষীয় বিনিময়ে বাংলাদেশ ও রাশিয়া পরস্পরের সহযোগী। পাবনার রূপপুরে যে বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপিত হচ্ছে, সেখানে রাশিয়ার বিপুল বিনিয়োগ রয়েছে।
এই বিনিয়োগের মাধ্যমে দুই দেশের সম্পর্ক নতুন এক ধাপে উন্নীত হওয়ার সুযোগ এসেছে দুই দেশের মধ্যে আন্ত সরকার কমিশন গঠনের মধ্য দিয়ে। সম্প্রতি অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের এক সভায় আলোচিত হয়েছে বাংলাদেশ থেকে রাশিয়ায় দক্ষ মানবসম্পদ রপ্তানির বিষয়টি। দেশটিতে দক্ষ মানবসম্পদ পাঠানো গেলে বাংলাদেশের জন্য সম্ভাবনার নতুন এক দুয়ার উন্মুক্ত হবে।
উদ্বৃত্ত জনসংখ্যার দেশ বাংলাদেশ থেকে বিদেশে জনশক্তি রপ্তানি করা হয়। বেশির ভাগ দেশে, বিশেষ করে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে ও মালয়েশিয়ায় অদক্ষ জনশক্তি রপ্তানি বেশি হয়। দক্ষ জনশক্তি রপ্তানির বাজার খুঁজে বের করা গেলে দেশে উপযুক্ত ও দক্ষ বেকারের সংখ্যা অনেক কমানো যেত। একই সঙ্গে বিদেশের বাজারের সঙ্গে সংগতি রেখে এখানে মানবসম্পদ উন্নয়নে মনোযোগী হলে দেশে দক্ষ জনশক্তি গড়ে তোলা সম্ভব হতো। এই দক্ষ জনশক্তি বিদেশে পাঠানো গেলে দেশে আসত মূল্যবান বৈদেশিক মুদ্রা। দেশের অর্থনীতিও তাতে সমৃদ্ধ হতো।
অন্যদিকে বিদেশের উপযোগী পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রেও একই কথা প্রযোজ্য। বিদেশে বাংলাদেশের অনেক পণ্য রপ্তানি হয়। এ ক্ষেত্রেও নতুন বাজার খুঁজে বের করতে হবে। কোন বাজারে কোন পণ্যের চাহিদা আছে, সেই পণ্য নিয়ে সেই বাজারে যেতে হবে। এ ব্যাপারে বিদেশে বাংলাদেশের মিশনগুলোও উদ্যোগী হতে পারে। আপাতত রাশিয়ার সঙ্গে সম্পর্কের যে উন্নয়ন হয়েছে, তার ধারাবাহিকতা রক্ষায় উদ্যোগী হতে হবে। রাশিয়া বিভিন্ন বাণিজ্যিক ক্ষেত্রে বাংলাদেশকে সহযোগিতার আগ্রহ দেখিয়েছে। হাইটেক পার্কসহ অর্থনৈতিক অঞ্চলে আইটি খাতে রাশিয়ার বিনিয়োগ কাজে লাগানোর বিষয়টি নিয়ে ভাবতে হবে। দেশের সমুদ্র সম্পদ আহরণেও রাশিয়ার আগ্রহ আছে। একই সঙ্গে রাশিয়ার বাজারে বাংলাদেশের পণ্য রপ্তানি বাড়ানোর বিষয়টিও অগ্রাধিকার পেতে পারে।
আমরা জানি, বিশ্বের উন্নয়নমুখী ও উন্নয়নশীল সব দেশই বাণিজ্যিক কূটনীতিতে অগ্রসর ভূমিকা পালন করছে। সুতরাং বাংলাদেশকে কোনোভাবেই পিছিয়ে থাকা উচিত হবে না। রাশিয়ার আগ্রহের বিষয় জেনে সেখানে রপ্তানি বাণিজ্য বৃদ্ধির পাশাপাশি নতুন নতুন বাজার খুঁজতে উদ্যোগী হতে হবে।
Leave a Reply