আ. স. ম আল আমিন
একবার রাসূলুল্লাহ সা: এর নিকট মুশরিক নেতৃবৃন্দ আগমন করেন, তিনি তাদেরকেইসলামের দাওয়াত দিচ্ছিলেন, এমতাবস্থায় অন্ধ সাহাবি হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে উম্মে মাকতূম রা: তাঁর খেদমতে উপস্থিত হলেন। অন্যদের সাথে কথাবার্তায় ব্যস্ত থাকায় রাসূলুল্লাহ সা. হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাকতূমের প্রতি দৃষ্টিদানের সুযোগ হয়নি। আর এ বিষয়কে উপলক্ষ করে নি¤œুক্ত আয়াত অবতীর্ণ হয়তিনি ভ্রূকুঞ্চিত করলেন এবং মুখ ফিরিয়ে নিলেন। কারণ, তাঁর কাছে এক অন্ধ আগমন করল। আপনি কি জানেন, সে হয়তো পরিশুদ্ধ হত, অথবা উপদেশ গ্রহণ করতো এবং উপদেশ তার উপকার হত। পরন্তু যে বেপরোয়া, আপনি তার চিন্তায় মশগুল। সে শুদ্ধ না হলে আপনার কোন দোষ নেই। যে আপনার কাছে দৌড়ে আসলো এমতাবস্থায় যে, সে ভয় করে, আপনি তাকে অবজ্ঞা করলেন। কখনও এরূপ করবেন না, এটা উপদেশবানী। (সূরা আবাসা : ১-১১) আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কুরআনে ইরশাদ করেন, ‘হে মানুষ! আমি তোমাদের সৃষ্টি করেছি এক পুরুষ ও এক নারী হতে; পরে তোমাদের বিভক্ত করেছি বিভিন্ন জাতি ও গোত্রে, যাতে তোমরা একে অপরের সঙ্গে পরিচিত হতে পারো। তোমাদের মধ্যে ওই ব্যক্তিই আল্লাহর কাছে বেশি মর্যাদাসম্পন্ন, যে বেশি মুত্তাকি।’ (সূরা হুজুরাত : আয়াত ১৩)
এরপর থেকে রাসূলুল্লাহ সা.প্রতিবন্ধীদের বিষয়েঅনেক সতর্কতা অবলম্বন করেন এবং তাদের প্রতি মহব্বতবাড়িয়ে তাদের প্রতি বিশেষ গুরুত্ব দিতে থাকেন। প্রতিবন্ধীদের প্রতি ভালোবাসা দেখানো এবং সাহায্য সহযোগিতা করা রাসূলুল্লাহ সা: এর উত্তম আদর্শ। তিনি কাজের মাধ্যমেতার বাস্তবায়ন করেছেন।
রাসূলুল্লাহ সা. সবশ্রেণির মানুষকে সমান চোখে দেখতেন। যার প্রমাণ বহন করে হযরত রা. বাকপ্রতিবন্ধী হওয়া সত্ত্বেও মসজিদে নববীর প্রথম মুয়াজ্জিনের মর্যাদা লাভের মাধ্যমে। হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস রা. বর্ণনা করেন যে, রাসূলুল্লাহ সা: যখনই অন্ধ সাহাবি আবদুল্লাহ ইবনে উম্মে মাকতুমকে দেখতেন, তখন তাকে বিশেষ মর্যাদা দিতেন এবং বলতেন স্বাগতম সেই ব্যক্তির জন্যে, যার ব্যাপারে আল্লাহ তাআলা আমাকে সতর্ক করেছেন। অতপর তাঁর কোনো প্রয়োজন আছে কিনা তিনি খোঁজ-খবর নিতেন।
হযরত আয়িশা রা. বলেন, রাসূলুল্লাহ সা. দু’বার জিহাদে গমন করার সময় আবদুল্লাহ ইবনে উম্মে মাকতুমকে তাঁর স্থলাভিষিক্ত করে গেছেন। মসজিদে নববিতে তিনি তেরবার নামাজের ইমামতি করেছেন। (আল হাদিস)
আমাদের সম্পদে তাদের অধিকার রয়েছে, পবিত্র কুরআনে আল্লাহ তায়ালা ইরশাদকরেন, ‘আর তাদের ধনসম্পদে অভাবগ্রস্ত ও বঞ্চিত ব্যক্তিদের হক বা অধিকার রয়েছে।’ (সূরা জারিয়াত: ১৯)রাসূলুল্লাহ সা: ইরশাদ করেন , ‘তোমরা ক্ষুধার্তকে খাদ্য দাও, অসুস্থ ব্যক্তির খোঁজ-খবর নাও, বস্ত্রহীন লোকদের বস্ত্র দাও এবং বন্দিকে মুক্ত করে দাও।’ (সহিহ বুখারি: ২৪১৭)
লেখক : কেন্দ্রীয় সদস্য সচিব , বাংলাদেশ কওমী ছাত্রপরিষদ
Alamin6568@gmail.com
Leave a Reply