ইসলামকে বিষয় হিসেবে ধারণ করে লেখালেখির চর্চা ইদানীং বেশ গতিশীল। বিভিন্ন জাতীয় দৈনিকের পাতায় লেখার মাধ্যমে উঠে আসছে অসংখ্য তরুণ। তবে তাদের লেখনীতে সময়কে যথার্থভাবে ধারণ করার প্রবণতা চোখে পড়ে কম। গতানুগতিক লেখার পরিমাণই বেশি। সংবাদপত্র যেহেতু দিনান্তের সাহিত্য এজন্য এখানে সমসাময়িক বিষয় বেশি গুরুত্ব পাওয়া উচিত। ইসলাম আধুনিক ও চিরসবুজ একটি ধর্ম। সময়ের ভাষায় শাশ^ত এই ধর্মের শৈল্পিক ও মনোরম উপস্থাপন পাঠকমনে দাগ কাটতে বাধ্য। গতানুগতিক ও গৎবাঁধা স্টাইল বাদ দিয়ে ফিচারের আঙ্গিকে অনেক সামান্য বিষয়কেও অসামান্য করে তোলা সম্ভব। এতে পাঠক একদিকে নতুনত্বের স্বাদ পাবে, অন্যদিকে ইসলামের সঠিক বার্তাটি জানতে পারবে।
জহির উদ্দিন বাবর
সভাপতি, বাংলাদেশ ইসলামী লেখক ফোরাম
ঠিক অনীহা বলতে চাচ্ছি না। পরিচর্যার অভাবে তরুণরা লেখালেখি থেকে মনোযোগ হারাচ্ছে। লেখালেখিতে একটি ঘোর বা নেশা আছে। নেশা বা ঘোরের জন্য গভীর পড়াশোনা প্রয়োজন। কাল মহাকাল উত্তীর্ণ লেখকদের গ্রন্থের সঙ্গে বন্ধুত্ব স্থাপন করতে হয়। আমাদের নবীন বা উঠতি বয়সীদের অধিকাংশ পড়াশোনায় একদমই ভাসাভাসা। কালের শ্রেষ্ঠ গ্রন্থ বা পাঠের সঙ্গে তাদের পরিচিতি একদমই কম।
পাঠে মনোযোগী হলে তরুণরা লেখালেখির স্বাদ অনুভব করবে। মনোযোগ ফিরে পাবে। বিপরীতে মাসিক মদীনা সম্পাদক মাওলানা মহিউদ্দিন খান রহমতুল্লাহি আলাইহির মত নবীনদের পরিচর্যার মানুষও কমে গেছে।
পড়াশোনা বাড়ালে ও পরিচর্যা করলে তরুণরা লেখালেখিতে মনোযোগী হবে। আগের মত মননশীল, সৃজনশীল সাহিত্য আড্ডা, সাহিত্যসভা কিংবা ঘরোয়া মজলিসগুলো কমে গেছে। এই সাহিত্য সভাগুলোও তরুণদের মনযোগী করতে সহায়ক। আর সোশ্যাল মিডিয়া থেকে দূরে থাকা বা সীমিত ব্যবহার শুধু তরুণ লেখিয়েদের নয়, সবার জন্যই এই আসক্তি বিপজ্জনক।
হুমায়ুন আইয়ুব
প্রিন্সিপাল, মাদরাসাতুস সালাম, ঢাকা
লেখালেখিতে নিজের বিশিষ্ট ও বৈশিষ্ট্যতা প্রমাণের বড় মাধ্যম হলো সমসাময়িক বিষয়ে পরিপক্ক পর্যবেক্ষণ ও জ্ঞান। এতে যার দক্ষতা যতটা, তিনি ততো বেশি প্রভাবশালী হতে পারেন। প্রবন্ধ, কাব্য, গল্প, উপন্যাস সবক্ষেত্রেই এটা সত্য। এই দক্ষতা আসে সমসাময়িক বিষয়ে পর্যাপ্ত জানাশোনা ও ইতিহাসচর্চা থেকে। অতীত সম্পর্কে যিনি যতোটা বেশি জানেন, তিনিই সমসাময়িক বিষয়ে গভীর ও তাৎপর্যপূর্ণ পর্যবেক্ষণ দিতে পারেন।
তরুণ লেখিয়েদের অনেকের ইতিহাসচর্চায় অনাগ্রহ খুব প্রকট। চলমান বিষয়েও সমান নিস্পৃহ তাঁরা। আবার অনেকের আগ্রহ থাকলেও ইতিহাসচর্চার অভাবে তারা সমসাময়িক বিষয়ে দুর্বল ও ক্ষেত্রবিশেষে ভুল পর্যবেক্ষণ দেন। এতে নিজেরা যেমন বিভ্রান্ত হন, বিভ্রান্ত করেন পাঠকদেরও। তাঁর লেখক-সত্তা ব্যর্থ হয় বোদ্ধাদের আস্থা অর্জনে।
নোমান বিন আরমান
সম্পাদক, দ্য বাঙাল
Leave a Reply