রবিবার, ২৮ মে ২০২৩, ০৬:৩৯ পূর্বাহ্ন

অতিথিসেবা সুন্নত | মুহাম্মাদ আবূ মূসা কাসেমী

অতিথিসেবা সুন্নত | মুহাম্মাদ আবূ মূসা কাসেমী

অতিথিসেবা সুন্নত

মুহাম্মাদ আবূ মূসা কাসেমী

অতিথিসেবায় অনন্য ছিলেন আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম। আল্লাহ তাআলা হযরত ইবরাহিম আ.-এর কাছে কয়েকজন ফেরেশতাকে মেহমানরূপে পাঠিয়েছিলেন। তিনি গরু জবাই করে তাঁদের জন্য মেহমানদারির আয়োজন করেছিলেন। এই বিষয় কোরআন মাজিদে এসেছে, ‘আমার ফেরেশতাগণ সুসংবাদ নিয়ে ইবরাহীম (আ.)–এর নিকট গেল। তারা বলল “সালাম”। তিনিও বললেন “সালাম”। তিনি অবিলম্বে একটি কাবাবকৃত গো-বাছুর পরিবেশন করলেন।’ (সূরা হুদ : আয়াত ৬৯)।

নবীজী আদর্শের প্রতীক ছিলেন হযরত শাহ জমিরুদ্দীন নানুপুরী রহ.। তিনিও অতিথিপরায়ণ ছিলেন। বর্তমান জামিয়া ইসলামিয়া উবায়দিয়া নানুপুরসহ বহু মাদরাসার মুরুব্বী, অভিভাবক আধ্যাত্মিক রাহবার, শায়খে তরীকত শায়খুল হাদীস আল্লামা শাহ সালাহ উদদীন বিন জমীর উদদীন নানুপুরীসহ তার প্রত্যেক ভাই দ্বীনের প্রেরণার কারণেই অতিথিপরায়ণ। হযরত আল্লামা শাহ সালাহ উদদীন নানুপুরী অসুস্থ ছিলেন, আল্লাহর মেহেরবানীতে মুহিব্বীন ও মুতাআল্লিকীনের দোয়ায় তিনি এখন অনেকটা সুস্থ।

তাকে দেখার জন্য, তার থেকে দোয়া নেয়ার জন্য আমরা গিয়েছিলাম সুদূর নানুপুরে। সফরের সাথী ছিলেন, কুড়িল সাহারা কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের মুতাওয়াল্লী হাজী সিরজুল ইসলাম, কাজী আজমাতুল উলূম মাদরাসার মুহতামিম মাওলানা কাজী আতীকুল ইসলাম, জোয়ার শাহারা মাদরাসার মুহতামিম মুফতি হোসাইন আহমাদ ও শিক্ষক মাওলানা হবীবুল্লাহ, জাহাঙ্গীর আলম ভাই ও আবেদ আলী ভাই।
সফরে অনেক কিছু বোঝা যায়। অনেক কিছু জানা যায়। মানুষকেও চেনা যায়। মাঝে মধ্যে সফর করা উচিত। তাহলে আল্লাহর এই দুনিয়ার অনেক কিছু সম্পর্কে জ্ঞাত হওয়া যায়।

সফরের সঙ্গীরা চলনসই হয়, সফরে যদি সময়মতো নামায আদায় করা যায়, খাবার দাবার সময়মতো হয়, তবেই সে সফর আরামদায়ক হয়। নতুবা সফরে কষ্টের সীমা থাকে না। আলহামদুলিল্লাহ, আমাদের সফরটি সর্বসাকুল্যে আরামদায়ক ছিলো। সফরে যিকির আযকার, তাসবীহ, তাহলীল, মুতালাআ, মুযাকারা করার অনেক সময় আমরা পেয়েছি। ইলম ও আমলের মারকাজ বলা যায় জামিয়া ইসলামিয়া উবাইদিয়া নানুপুরকে।

দিবারাত সেখানে আমলের মাশক হয়। মাদরাসাটির ভিত্তিই ইলম, আমল ও দাওয়াতের ওপর। মেহমানের কদর কীভাবে করতে হয়, তা নানুপুর মাদরাসায় গেলে অনেকটা অনুভব করা যায়। নানুপুর মাদরাসার অতিথিসেবা ও দস্তরখান ঈর্ষণীয়।

মাদরাসাটির মহাপরিচালক হলেন, আমাদের হযরত শাহ সালাহ উদদীন নানুপুরী অসুস্থ। দেশসহ বহির্বিশ্বেও হযরতের জন্য দোয়া হয়। আল্লাহ তাআলা যেন হযরতের হায়াতকে আরো বাড়িয়ে দেন। আর হযরতের পরিকল্পিত কাজগুলোকে সমাপ্ত করার তাওফিক দেন।

জামিয়া ইসলামিয়া উবায়দিয়ার বর্তমান শায়খুল হাদীস আল্লামা কুতুবউদ্দিন বিন জমীর উদদীন নানুপুরীর সঙ্গে আমাদের সাক্ষাৎ হয়। তাকে আগামী ২০ নভেম্বর রবিবার কুড়িল-এর ইসলাহী মাহফিলে দাওয়াত করা হয়।

নানুপুর থেকে আমাদের যাওয়া হয় চট্টগ্রামের সুগন্ধায় এস আলম টাওয়ারের পাশে অবস্থিত ১৭৭ নং নাসায় আল মানাহিল নাসচার জেনারেল হাসপাতাল-এর চেয়ারম্যান মাওলানা হেলাল উদ্দিন বিন জমীর উদদীন নানুপুরীর অফিসে।
সেখান থেকে পতেংগা হালিশহর হাসপাতালে।

হাসপাতালটি উলামায়ে কেরামের সেবায় পরিচালিত। খুব সুন্দর একটা হাসপাতাল। যা কভিড-৯৯ এর সময় রোগীদের সেবা দিয়ে সবার নজর কাড়তে সক্ষম হয়েছে।

বাপ কা বেটা কুচ না হো তু থোড়া থোড়া। চেয়ারম্যান মাওলানা হেলাল উদ্দিন নানুপুরীর ব্যবহারে, আচরণে, আতিথেয়তায় সফরের সাথীরা মুগ্ধ। যা সবাইকে হযরত কুতবুল আলমের কথাকে বারবার স্মরণ করিয়ে দেয়।
কেউ অসুস্থ হলে তাকে দেখতে যাওয়া, তার সেবা করা, তার খবরাখবর নেয়া নবীজীর সুন্নাত। আল্লাহ তাআলা আমাদেরকে এই সহজ সুন্নাতটি আমল করার তাওফিক দান করুন। আমীন।

লেখক : শাইখুল হাদিস, জামিয়া আফতাবনগর, ঢাকা
খতীব, কুড়িল কাজী বাড়ী জামে মসজিদ, ঢাকা

শেয়ার করুন...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

© All rights reserved 2018 shilonbangla.com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com