শীলনবাংলা ডটকম (আদিব সৈয়দ) ● আমেরিকা। প্রথা ভাঙা যায় আবার গড়াও যায়। তবে প্রথা ভাঙার মতো মোরদ থাকতে হয়। সেই ব্যক্তিত্ব আছে ইলহান ওমরের। তিনি দেখেয়েছেন সেই শক্তি। সদ্য নির্বাচিত মুসলিম কংগ্রেস সদস্য ইলহান ওমর সত্যিই সেই সাহসিকতার নাম। স্কার্ফ পরেই মার্কিন প্রতিনিধি পরিষদে ঢুকতে চাওয়ার এই সাহস সদ্যনির্বাচিত ইলহান ওমর দেখাতে পারেন। হিজাবের প্রতি সাধারণ মানুষের ভক্তি ও ভালোবাসাও কুড়াতে পারেন।
ফুটবলে মিসরের মোহাম্মদ সালাহ যেমন নিজেকে রাঙিয়েছেন। তার আল্লাহ প্রেমের সেজদা কত অন্য ধর্মের মানুষেরাও দিয়েছে। কিশোর কিশোরি দিয়েছে। তাদের হৃদয়ে নাড়া দিতে সক্ষম হয়েছেন সালাহ। বিশ্ব তাকে ভুলতে পারবে না। অত্যোজ্জ্বল জনপ্রিয় হওয়া সত্ত্বেও দিদিয়ার দ্রগবা, লিওনেল মেসি, রোনালদো সেই ভালোবাসা কুড়াতে সক্ষম হননি।
মার্কিন প্রতিনিধি পরিষদে মাথায় স্কার্ফ পরার ওপর নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার আহ্বান জানাবেন বলে জানিয়েছেন সদ্য নির্বাচিত মুসলিম কংগ্রেস সদস্য ইলহান ওমর। দেশটির সবচেয়ে বড় মুসলিম অধিকার সংস্থাও এ উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছে।
প্রসঙ্গত, এক সময়ের সোমালি শরণার্থী হলেও এবার মার্কিন কংগ্রেস সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন ইলহান।
টুইটারে তিনি আরও জানান, কেউ এসে আমার মাথায় স্কার্ফ পরিয়ে দেননি। আমি নিজেই পরেছি। এটি আমার পছন্দ, যেটি প্রথম সংশোধনীতে সুরক্ষিত। ধর্মীয় রীতি অনুসারে ইলহান ওমর মাথায় স্কার্ফ পরেন।
দেশটির ১৮১ বছরের রীতি অনুসারে কংগ্রেসে বক্তব্য দিতে হলে তাকে এই স্কার্ফ খুলতে হবে। মাথায় স্কার্ফ পরে তিনি কংগ্রেসে ঢুকতেও পারবেন না। মাথায় স্কার্ফ না পরার বিধান পরিবর্তন করতে ডেমোক্র্যাটিক পার্টির এক প্রস্তাবেরও সহ-লেখক তিনি। প্রস্তাবটির লেখকদের মধ্যে রয়েছেন- ডেমোক্র্যাটিক পার্টির নেতা ন্যানসি পেলোসি ও জিম ম্যাকগভার্ন।
প্রসঙ্গত, মার্কিন ভোটে মিনেসোটা ও মিশিগানের ভোটাররা তাদের প্রতিনিধি হিসেবে ইলহান ওমর ও রাশিদা তালিবকে নির্বাচিত করেছে, খবর বার্তা সংস্থা রয়টার্সের।
গৃহযুদ্ধের কারণে সোমালিয়া থেকে পালিয়ে আসা ওমর একজন সাবেক শরণার্থী ও তালিব ডেট্রয়িটে জন্মগ্রহণকারী ফিলিস্তিন-আমেরিকান পিতামাতার সন্তান।
তারা দুজনেই ডেমোক্রেট প্রতিনিধি হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন।
মিনেসোটা থেকে নির্বাচিত ইলহান ওমর সোমালিয়া থেকে আসার পর যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকত্ব পান। তিনি মিনিসোটা অঙ্গরাজ্যের আইন পরিষদেরও সদস্য ছিলেন। শিশু বয়সে তিনি চার বছর কেনিয়ার একটি শরণার্থী শিবিরে ছিলেন।
দুই বছর আগে যে রাতে ডোনাল্ড ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন সেই রাতে প্রথম সোমালি-আমেরিকান হিসেবে ওমর দেশটির একটি অঙ্গরাজ্যের আইন পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হন। ওই প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ট্রাম্প সব মুসলিমের যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে প্রচারণা চালিয়েছিলেন।
যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেসের প্রথম হিজাব পরা সদস্য হতে যাচ্ছেন ৩৬ বছর বয়সী ওমর।
অপরদিকে ৪২ বছর বয়সী তালিবও ইতিহাসের ধারা পাল্টে দেওয়া আরেকজন নারী। ২০০৮ সালে প্রথম মুসলিম নারী হিসেবে তিনি মিশিগান আইন পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন।
ফিলিস্তিন থেকে যুক্তরাষ্ট্রে আসা এক পরিবারের ১৪ সন্তানের মধ্যে তিনি সবার বড়। ডেট্রয়িটে তার পিতা ফোর্ড মোটর কোম্পানির একটি প্রকল্পের কর্মী ছিলেন।
ইতিহাস সৃষ্টিকারী এ দুই নারীই ব্যাপকভাবে ডেমোক্রেট প্রভাবিত এলাকা থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে নির্বাচিত হয়েছেন। তাদের মধ্যে ওমর বিরাট ব্যবধানে জয় পেয়েছেন।
ভারত ও আমেরিকার জার্নাল অবলম্বনে
Leave a Reply