মহল্লার ইমাম সাহেব আতিকুর রহমান, তাঁর দুইজন ছেলে রয়েছে নামাজে ফাঁকিবাজ। সালমান-সাফওয়ান তারা কোন একদিন ফজরের নামাজে উঠতে দেরি করে ফেলল। হঠাৎ তাঁর বাবা মসজিদ থেকে বাড়ি ফিরল, তাঁর বাবার আওয়াজ শুনে তাঁরা দৌড়ে নামাজে দাঁড়ালো। তাদের বাবা বুঝে ফেলল তারা আমাকে দেখানোর জন্য নামাজ পড়ছে। দাঁড়িয়ে তাদের দিকে তাকিয়ে রইলো, দুই ভাই মনে মনে ভাবতেছে যায় না কেন? মানে আজ বাবা আমাদের ভ-ামি বুঝে ফেলল। সালামের পর বাবা তাদের কাছে এলেন এবং বললেন তোমরা দু’জন কেমন আছো? মনে হয় আজ নামাজ অনেক দেরি করে ফেলেছ, তারা একে অপরের দিকে তাকাচ্ছে। বাবা তাঁদেরকে জিজ্ঞেস করলো, তোমরা কী জানো? কারা আল্লাহ তায়ালাকে ধোঁকা দেয়, একথা শুনে তাদের অবস্থা আরো খারাপ, তারা উত্তরে বলল, না। তাহলে শুনো, পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, এই মুনাফিকরা আল্লাহর সাথে ধোঁকাবাজি করছে। অথচ আল্লাহই তাদেরকে ধোঁকার মধ্যে ফেলে রেখেছেন। তারা যখন নামাযের জন্য ওঠে, আড়মোড়া ভাঙতে ভাঙতে শৈথিল্যসহকারে নিছক লোক দেখাবার জন্য ওঠে এবং আল্লাহকে খুব কমই স্মরণ করে। ( আন-নিসা ১৪২) তারা দুই ভাই মনে মনে বলতেছে সম্পূর্ণ কথাতো আমাদের সাথে মিলে গেছে, তারা মুচকি হেসে বাবাকে জিজ্ঞেস করলো। বাবা তাহলে মুনাফিকরা মুমিন না কাফের তারা দুই দলের কোন দলের অন্তর্ভুক্ত? তাও শুনে নাও পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, কুফর ও ঈমানের মাঝে দোদুল্যমান অবস্থায় থাকে, না পুরোপুরি এদিকে, না পুরোপুরি ওদিকে। যাকে আল্লাহ পথভ্রষ্ট করে দিয়েছেন তার জন্য তুমি কোন পথ পেতে পারো না।( আন-নিসা ১৪৩)
রাসূল সা. বলেছেন, দেরিতে আদায়কৃত নামাজ মুনাফিকের নামাজ। মুনাফিক আসরের নামাজের অপেক্ষায় বসে বসে দেরি করতে থাকে। অবশেষে যখন সূর্য ডুবে যাওয়ার উপক্রম হয় এবং শয়তানের দুই শিংয়ের মাঝখানে অথবা দুই শিংয়ের উপরে চলে আসে, তখন সে নামাজে দাঁড়িয়ে চারবার ঠোক মারে। ঐ নামাজে সে আল্লাহকে খুব কমই স্মরণ করে থাকে। (আবু দাউদ) বাবার বয়ানের পর দুই ভাই বলে উঠলো, আপনি যে বয়ান করেছেন তা আমাদের সাথে মিলে গিয়েছে। লোক দেখানো সাালাত খুবই বিরক্তিকর। যা আমরা দুইজন আজ আপনার বয়ান থেকে বুঝতে সক্ষম হয়েছি। এখন থেকে আমরা দুই ভাই বিনয়ের সাথে আল্লাহ তায়ালার সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য নামাজ আদায় করবো।
লেখক : শিক্ষার্থী, মাহাদুল ইকতিসাদ ওয়াল ফিকহীল ইসলামী ঢাকা
Leave a Reply