শীলন বাংলা ডটকম : দরুল আজহারের আজকের বিকেলটি ছিল আলোকোজ্জ্বল। দেশের ইলম ও হেদায়াতের নুর বিতরণকারী এক নক্ষত্রের শুভাগমনে বর্ণিল হয়ে উঠে রোববার সকলের প্রিয় দারুল আজহারের ক্যাম্পাস। বাংলাদেশের বর্ষীয়ান আলেম, জন সাধারণের আস্থা ও ভালোবাসার কেন্দ্র, দেশের অন্যতম বুযুর্গ ও জ্ঞানতাপস, খেলাফত মজলিসের নায়েবে আমীর আল্লামা আব্দুল বাসিত আজাদ (বড় হুজুর) রোববার তাশরীফ আনেন সিলেটের সার্বজনীন প্রতিষ্ঠান দারুল আজহারে। তিনি মুহিউস সুন্নাহ শায়খ আবরারুল হক হারদুয়ী রহ. এর খলিফা। আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরীর সাথী। জামেয়া মাদানিয়া বানিয়াচং এর মুহতামিম।
রোববার বাদ আসর মাদরাসা দফতরে দারুল আজহারের শিক্ষকদের উদ্দেশ্যে আলোচনায় অংশ নেন আল্লামা আজাদ। এ সময় তিনি বলেন, দ্বীনের মহব্বত ও দেশপ্রেম দুটোই আলেমদের উত্তরাধিকার। আলেম সমাজকে একই সাথে দ্বীনের হেফাজত ও দেশের স্বাধীনতা রক্ষার প্রহরী হিসেবে সর্বদা সজাগ থেকে দায়িত্ব পালন করতে হবে। ১৮৫৭ এর গণবিপ্লব, ১৯৪৭ এর বৃটিশ বিতাড়ন, ৬০ এর দশকে আইয়ুবখান মোনায়েম খান বিরোধী আন্দোলন, মাওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানীর ফারাক্কা বিরোধী সংগ্রাম, মাওলানা আবদুর রশীদ তর্কবাগিশের পাকিস্থানের জুলুম বিরোধী আন্দোলন- এ সবই ছিল ওলামা, আকাবিরের দেশপ্রেম ও স্বদেশের স্বাধীনতা রক্ষা আন্দোলনের উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত।
মাদরাসার অধ্যক্ষ মাওলানা মনজুরে মাওলার সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত এ সভায় তিনি আরো বলেন, ইতিহাস বিকৃতি ও ঐতিহ্য মুছে দেয়ার অপচেষ্টা যতই করা হোক না কেন, সত্য কখনো লুকিয়ে থাকে না এবং তা দীর্ঘকাল ঢেকে রাখা যায় না। সৈয়দ আহমদ শহীদ বেরলভী, ইসমাইল শহীদ বেরলভী, কাসিম নানুতুবী, শায়খুল হিন্দ মাহমুদুল হাসান, হুসাইন আহমদ মাদানী, গোলাম গউস হাজারভী, শাব্বির আহমদ উসমানী, মাওলানা আতহার আলী, শামসুল হক ফরিূপুরী প্রমুখ ওলামায়ে কেরামের স্বাধীনতা সংগ্রাম ও পর্বতসম ত্যাগ ভারতের মহাত্মা গান্ধী থেকে নিয়ে সমকলীন বিশ্বের সবার নিকট স্বীকৃত ও শ্রদ্ধার। তাই সে উত্তরাধিকার থেকে আজও আমাদের সকল আলেমকে ইসলামের হেফাজত ও মাতৃভূমি রক্ষার আন্দোলনে নিজেকে সঁপে দিতে হবে।
বাদ মাগরিব ছাত্রাবাসের আবাসিক শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে পৃথক সমাবেশে তিনি হেদায়াতী নসীহত পেশ করেন। এ সময় তিনি বলেন, আমাদের ছাত্রদেরকে আকাবির-আসলাফদের গৌরবোজ্জ্বল ঐতিহ্য বয়ে নিয়ে এগিয়ে যেতে হবে। নিজের জীবন গড়তে ও ক্যারিয়ার সাজাতে গভীর অধ্যয়নে মনযোগী হতে হবে। পরীক্ষার জন্য লেখাপড়া নয় বরং জ্ঞানের জন্য পড়ালেখা করতে হবে। আগামী দিনে দ্বীনের খেদমত ও দেশের সেবার জন্য এখন তোমাদের নিজেকে গড়তে হবে। আমি বিশ্বাস করি এ লক্ষ্য অর্জনে দারুল আজহার মাদরাসা হবে আগামী দিনের কাঙ্ক্ষিত প্রজন্ম গড়ার দক্ষ কারিগর।
অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন মাদরাসার শিক্ষাসচিব মাওলানা আসাদুর রহমান চৌধুরী, মাওলানা জুবায়ের আহমদ, মাওলানা রিয়াজ আল আসাদ, মাওলানা বাহাউদ্দিন আরমান ও মাওলানা আব্দুল মোমিন প্রমুখ।
Leave a Reply