বৃহস্পতিবার, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০২:১৪ অপরাহ্ন

আলেমদের সু-নজরে এখন চরমোনাই

আলেমদের সু-নজরে এখন চরমোনাই

আলেমদের সু-নজরে এখন চরমোনাই

মাওলানা আমিনুল ইসলাম : চরমোনাই এর খানকার প্রতিষ্ঠাতা সৈয়দ ইসহাক ( রহঃ) ছিলেন উজানীর ক্বারী ইব্রাহীম ( রহঃ) এর খলিফা। সৈয়দ ইসহাক সাহেব ( রহঃ) চরমোনাই খানকা প্রতিষ্ঠা করার পর সারাদেশেই দ্বীনের দাওয়াত এর প্রচার শুরু করেন। তাঁর জীবদ্দশায় বহু শ্রম তিনি দিয়ে ছিলেন। সে সময়ে পায়ে হেঁটে হেঁটে বহু সফর করেছেন। টিনের চোঙা বানিয়ে তা দিয়ে নিজে নিজে গ্রামে গঞ্জে মানুষকে দ্বীন ইসলামের প্রতি আহবান করতেন।

সৈয়দ ইসহাক ( রহঃ) এর ইন্তেকালের পর চরমোনাই এর খানকার দায়িত্ব প্রাপ্ত হন সৈয়দ ফজলুল করীম ( রহঃ)।

হযরত ফজলুল করীম ( রহঃ) তাঁর পিতার স্হলাভিষিক্ত হয়ে চরমোনাই খানকার ব্যাপক সম্প্রসারণ করেন। সারাদেশের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে চরমোনাই মাদ্রাসা এবং খানকার সুনাম। মরহুম ফজলুল করীম সাহেব সারা বাংলাদেশের আনাচে কানাচে সফর করতে থাকেন।

তিনি চরমোনাইতে আলীয়া মাদ্রাসা শাখার পাশাপাশি কওমী মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা করেন। এমনি ভাবে মুজাহিদ কমিটির পাশাপাশি গঠন করেন ইসলামী রাজনৈতিক সংগঠন, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ।

মোটকথা মরহুম পীর সৈয়দ ইসহাক( রহঃ) বীজ বপন থেকে চারা পর্যন্ত এসে ছিলেন। আর শায়েখ ( রহঃ) চারা থেকে সেটা বড় গাছে রুপান্তরিত করেন। যে গাছের শাখা প্রশাখা হয়ে ওঠে অনেক।

এরপর ২০০৬ সনে সৈয়দ ফজলুল করীম সাহেব ইন্তেকাল করেন। তাঁর ইন্তেকালের পর চরমোনাই এর খানকার দায়িত্ব প্রাপ্ত হন, সৈয়দ রেজাউল করীম সাহেব ও সৈয়দ ফয়জুল করীম সাহেব। যথাক্রমে তাঁরা আমীর ও নায়েবে আমীর।

সৈয়দ রেজাউল করীম ও সৈয়দ ফয়জুল করীম সাহেব দায়িত্ব পাবার পর থেকে চরমোনাই এর খানকা আরো তরক্কি লাভ করে।
আগে ছিল চরমোনাই এর সুনাম শুধু বাংলাদেশে। এখন চরমোনাই এর সুনাম দেশের সীমানা পেরিয়ে বিদেশে।
বিশেষ করে মাদারে ইলমী দারুল উলুম দেওবন্দের সাথে তাদের হট লাইন।

চরমোনাই খানকা প্রতিণ্ঠা লাভের পর থেকে কখনো দেওবন্দের সাথে এমন সম্পর্ক জমে ওঠেনি, যে রকম মধুর সম্পর্ক আমরা এখন দেখছি।

এখন প্রতি বছর দেওবন্দ থেকে ওলামা মাশায়েখ গন চরমোনাই এর বাৎসরিক মাহফিলে শরীক হচ্ছেন। ষ্টেজে বয়ানও করে থাকেন।

আর এই দেওবন্দের সাথে সু সম্পর্কের কারণে সারা দেশের আলেম উলামাদের মাঝে বিশাল এক গ্রহণ যোগ্যতা সৃষ্টি হয়েছে।

আগে আলেমগণ চরমোনাই কে কেমন যেন আমলে আনতে চাইত না। কিন্তু দারুল উলুমের সাথে নেসবতের কারণে চরমোনাই অনেক উপরে উঠতে সক্ষম হয়েছে। সেই সাথে দেশ বিদেশের আলেম উলামার মাঝে ব্যাপক গ্রহণ যোগ্যতা লাভ করেছে।

ভারত উপমহাদেশ ছাড়িয়ে চরমোনাই মধ্যপ্রাচ্যে স্হান করে নিয়েছে। সৌদি আরবের আলেমদের সাথে চরমোনাই এর বিশাল সখ্যতা। সৌদি আরব থেকেও আলেমগণ চরমোনাইতে আসছেন।

এখন মাহফিলের সময় দেখা যায়, চরমোনাইতে আলেম উলামার ঢল। বাংলাদেশের শীর্ষ স্হানীয় প্রতিষ্ঠান হাটহাজারী থেকে শুরু করে প্রায় বহু মাদ্রাসার আলেম উলামা চরমোনাই তে হাজির হন। বিভিন্ন মাদ্রাসার মুহতামিম, শায়খুল হাদীস,মুহাদ্দিস,মুদাররিস এমনি ভাবে বিভিন্ন ইসলামী চিন্তাবিদ গনকে চরমোনাইতে দেখা যায়।
তাছাড়া চরমোনাই এর যে সব সংগঠন রয়েছে, যেমন মুজাহিদ কমিটি, ইসলামী আন্দোলন, এসব সংগঠনের কমিটির বিভিন্ন পদ অলংকৃত করে আছেন ওলামায়ে কেরাম।

যার কারণে চরমোনাই এখন আর আগের চরমোনাই নেই। এখন আলেম উলামার অংশ গ্রহণে অনেক সৌন্দর্য বৃদ্ধি পেয়েছে, এ খানকার এবং সংগঠনের। আর সেই সাথে এখন দুর্বার গতিতে এগিয়ে চলেছে।
আমরা আশাবাদী চরমোনাই আরো অনেক উচ্চতায় উঠে যাবে ইনশাআল্লাহ।

লেখক : সমাজ বিশ্লেষক

শেয়ার করুন...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

© All rights reserved 2018 shilonbangla.com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com